Skip to main content
শারদীয়ার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন , করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঘরে থাকুন , সুস্থ থাকুন -------- STAY HOME STAY SAFE protect your family

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ যেতে চাইলে



বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে দেশের সিংঘভাগ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন, তারা দেশের বাইরে পড়তে যাবে। কিন্তু কেনো তারা দেশের বাইরে পড়তে যেতে ইচ্ছুক সে বিষয়ে তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট বক্তব্য জানা নেই।
দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা অনেকেই সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগে থাকি। কারণ, বিষয়টি আমাদের জন্য যথেষ্ট নতুন এবং আমরা সেরকম দক্ষ মেন্টরও পাই না, যারা আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবেন। যার ফলে আমরা অনেকেই মিসকন্সেপশনে ভুগে থাকি এবং এই কারণে অনেক উল্টোপাল্টা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি।
অনেকসময় বিভিন্ন দালাল কিংবা এজেন্সির লোকেরা এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে এই বলে যে, নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা এবং পাসপোর্ট দিলেই তারা ভিসা- থাকা- খাওয়া ও পড়ার ব্যবস্থা করে দেবে। এইসব ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই নিজের লাখ লাখ টাকার লোকসান করেছেন।
আমি ২ টা স্কলারশীপ প্রোমোটিং প্ল্যাটফর্মে সাথে কাজ করেছি স্কলারশীপ প্রোমোটার হিসেবে। একটা Youth Opportunities এবং অন্যটা International Scholarship Non-profit Organization. আমার সেই অভিজ্ঞতা এবং ইন্টারনেট থেকে কিছু রিসার্চ করে আজকের এই ফিচার টি লিখছি।

কেনো বিদেশে পড়তে যাবো?
বিদেশে কেনো পড়তে যাবো, এই প্রশ্নটা আগে নিজেরই নিজেকে করা উচিত।
যদি উত্তর হয় চাকরিক্ষেত্রে বাড়তি লাভ কিংবা সিভিটা একটু ভারী করা, তাহলে বিদেশে পড়তে যাওয়া আপনার জন্য নয়।

আমাদের দেশের মানুষেরা ভাবেন, এইচএসসি পাশ করেই আন্ডার গ্রাজুয়েশনের জন্য নিজেদের সন্তানদের বিদেশে পড়াতে পাঠিয়ে দেওয়াই হলো সঠিক সিদ্ধান্ত। আবার অনেকেই দেশের কোনো পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে চান্স না পেয়ে দেশের বাইরে পড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
কিন্তু বিদেশে যেয়ে গ্রাজুয়েশন করার আগে দেশে থেকেই ব্যাচেলর ডিগ্রি শেষ করে যাওয়া ভাল।
অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, বিদেশে যেয়ে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী নিজের পড়াশুনাটা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারেন না। কেননা তাদের মধ্যে বেশিরভাগই টিউশন ফি দিয়ে বিদেশে পড়তে যান। যার ফলে তারা সেই দেশে যেয়ে কোন রেঁস্তোরায় বা পেট্রোল পাম্পে পার্টটাইম চাকরি করেন।

আর এই পার্টটাইম চাকরির পেছনে এতটাই সময় চলে যায় যে এরপর সময়মতো ক্লাসে যাওয়া, অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া, পরীক্ষা দেওয়ার সময় পান না। তখন দেশে ফিরে আসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। কিন্তু এখানেই বাঁধে বিপত্তি। কেননা দেশ থেকে অনার্স কমপ্লিট না করে যাওয়ায়, দেশে ফিরে তারা হয়ে যান ইন্টারমিডিয়েট পাশ। তখন তারা মনমতো কোনো চাকরিও পান না, চাকরির বয়সও পার হয়ে যেতে থাকে। যেই সময়টায় বন্ধুরা সবাই চাকরিতে ঢুকে পড়ে। আবার বিদেশে পড়াশুনা শেষ না করে কোনো ভাল চাকরিও পাওয়া যায় না, আপনার যত দক্ষতাই থাকুক না কেন। তখন হয়তো সেই পার্টটাইম কাজটাই আপনাকে ফুলটাইম মানে সারাজীবন চালিয়ে যেতে হবে।

তাই বিদেশে পড়তে যাওয়ার আগে সবকিছু ভেবেচিন্তে যাওয়াটাই জরুরি৷ বিদেশে পড়তে যাওয়ার প্রক্রিয়াটা বেশ ব্যয়বহুল। তাই শুধু সামর্থ্য থাকলেই টিউশন ফি দিয়ে পড়া উচিত, নাহলে না।

বিশ্বের অনেক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টদের জন্য স্কলারশিপের ব্যবস্থা করে। তাই সেইসব ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে যেয়ে দেখতে হবে স্কলারশিপের ধরণ, স্কলারশিপ দেবে কিনা, স্কলারশিপ পেতে হলে কী কী যোগ্যতা থাকা লাগবে। যদি স্কলারশিপ না পান, তাহলে টিউশন ফি ছাড়া কোনো ইউনিভার্সিটি আছে নাকি, সেটার খোঁজ করতে হবে। আজকাল অনেক ইউনিভার্সিটিতেই টিউশন ফি ছাড়া পড়ানো হয়। ওয়েবসাইট ঘাঁটাঘাঁটি করলেই সেটার খোঁজ পাবেন।

যদি টিউশন ফি ছাড়া পড়ারও কোনো অপশন থাকে না, তাহলে শুধু সামর্থ্য থাকলেই আপনার জন্য বিদেশে পড়তে যাওয়ার পথটুকু খোলা থাকবে। এছাড়াও আপনি যেই কোর্সটা করতে যাচ্ছেন, তার চাহিদা বিশ্ববাজারে কেমন, ১০ বছর পর এর চাহিদা কেমন হবে, দেশে ফিরে এই কোর্স নিয়ে আবার পড়াশুনা করা যাবে নাকি, কেমন চাকরি করতে পারবেন- এইসব বিষয়ও মাথায় রাখাটা দরকার। অনেকেই এইসব বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা না থাকায় অথৈ জলে হাবুডুবু খেতে থাকেন।

University of Oxford

স্কলারশিপের খোঁজ-খবর:
আমরা অনেকেই Youth Opportunities - এর নাম শুনেছি। এই ওয়েবসাইটে বিশ্বের কোথায় কোন প্রতিযোগিতা হচ্ছে, কোথায় ভলান্টিয়ার লাগবে, কোন কোন প্রতিষ্ঠানে পেইড ইন্টার্ন নিচ্ছে এমনকি স্কলারশিপের খোঁজ-খবরও দেওয়া হয়। আপনারা চাইলেই কোন কোন দেশে স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে, তাদের ওয়েবসাইটে যেয়ে একটু ঢুঁ মেরে আসতে পারেন।

লিংক: https://www.youthop.com/

এছাড়াও বাংলাদেশ শিক্ষামন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট : https://moedu.gov.bd/

স্কলারশিপ পাওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের টার্গেট কান্ট্রি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন, জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং রাশিয়া। এইসকল দেশের স্কলারশিপ সংক্রান্ত খোঁজখবর মিলবে তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইগুলোতে। যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার তথ্যের জন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটের লিংক:


যুক্তরাজ্যের অনুমোদিত কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকা পাওয়া যাবে এই লিংকে-  https://www.gov.uk/browse/visas-immigration/student-visas

অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে - 

কানাডায় উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনীয় তথ্য মিলবে - 

জার্মানীতে পড়াশোনা এবং গবেষণা সংক্রান্ত আরও তথ্য পাওয়া যাবে -
 https://www.daad.de/deutschland/index.en.htm

এবং বৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে - 
https://www.daad.org.uk/en/ 

এছাড়াও ঢাকাস্থ এইসব দেশের দূতাবাসে গেলেও প্রয়োজনীয় সব তথ্যই পাওয়া যাবে। এছাড়া যে কোনো তথ্যের জন্য গুগল তো আছেই।

বিদেশে পড়ার উপকারিতা কী?
বিদেশে পড়তে যাওয়ার উপকারিতা অবশ্যই আছে, নাহলে তো সবাই বিদেশে পড়ার জন্য উঠে পড়ে লাগতো না! বিদেশে সবাই পড়তে যায় ভালমানের উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, “কেনো? দেশে কী উচ্চশিক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই?”

অবশ্যই আছে! কিন্তু দেশের শিক্ষাব্যবস্থার সাথে বিদেশের শিক্ষাব্যবস্থার বেশ বড় একটা ফারাক আছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক কোনো রাজনীতি নেই, নেই কোনো সেশনজট। গবেষণা করার অফুরান্ত সুযোগ পাওয়া যায় বিদেশে৷ আর একাজে সেই কোর্সের প্রফেসর থেকে শুরু করে ডিপার্টমেন্ট হেড, সকলেই খুব সাহায্য করে থাকেন।

এছাড়াও শিক্ষা গ্রহণের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই।  

The world is a book, and those who do not travel read only one page.
 ‌‌‌‌‍ – Saint Augustine

অর্থাৎ পুরো পৃথিবী না ঘুরলে এই বিশ্ব সম্পর্কে কোনো কিছুই জানা যাবে না। নিজের দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার ঘটাতে এবং বিভিন্ন কাজে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

যারা বিদেশে থেকে পড়াশুনা করেছেন, তারা সাধারণ মানুষের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি স্বাধীনচেতা, আত্মনির্ভরশীল, বুদ্ধিমত্তা ও সৃজনশীল ক্ষমতার দিক থেকে অনেক এগিয়ে। নিজের পরিবার ছেড়ে যেহেতু বিদেশে সম্পূর্ণ একা থাকতে হয়, তাই তারা আত্মনির্ভরশীল এবং সমস্যা সমাধানে পটু। শুধু তাই নয়, তারা কোনো চ্যালেঞ্জিং কাজ করতে পিছপা হয় না। বিদেশে থাকার অভিজ্ঞতা অনেক মূল্যবান, যদি দেশে এসে সেই অর্জিত জ্ঞান আপনি সঠিক জায়গায় কাজে লাগাতে পারেন।  

 University of Cambridge

বিদেশে অবস্থানের ফলে আপনি সেই দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ, রীতিনীতি সম্পর্কে অবগত হবেন। এর পাশাপাশি বিশ্ব সম্পর্কে আপনার এক অন্যরকম দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পাবে। বিশ্বের রাজনৈতিক ইস্যুগুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। বিদেশে থাকার ফলে আপনাকে সেই দেশের ভাষা শিখতে হবে, যা আপনার অভিজ্ঞতার মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত করবে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার ফলে তা শুধু আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং মূল্যবোধের উন্নয়ন ঘটাবে না, পাশাপাশি আপনার পেশাগত দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। চাকরির বাজারে আপনার চাহিদা বেড়ে যাবে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।

বিদেশ ফেরত গ্র্যাজুয়েটরা আন্তর্জাতিক জ্ঞানে সমৃদ্ধ এবং মাতৃভাষা ছাড়াও এক বা একাধিক ভাষাতে দক্ষ; আর এই দুটি বিষয়ের উপর জোর দিয়ে থাকে এই আন্তর্জাতিক বা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো। এছাড়াও তাদের কমিউনিকেশন স্কিল, অন্য সংস্কৃতি ও সমাজের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জ্ঞান থাকায় এবং সেই সাথে নতুন পরিস্থিতিতে বিকল্প উপায় ভাবা এবং ঝুঁকি নেয়া সম্ভব হয় বলে প্রতিষ্ঠানগুলো গ্র্যাজুয়েটদের জন্য সর্বোচ্চ রকম সুযোগ-সুবিধা প্রস্তাব দিয়ে থাকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে রাখার জন্য।

এবার প্রস্তুতি নেওয়ার পালা
কেনো বিদেশে পড়তে যাবো, তার কারণ নাহয় জানা গেলো। এবার পরবর্তী ধাপ হলো বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করা৷ বিদেশে পড়তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হঠাৎ করে না নেওয়াটাই ভাল। সবচেয়ে ভাল হয়, বিদেশে পড়তে যাওয়ার চিন্তা ভাবনা ইন্টারমিডিয়েটের সময়েই যদি করে ফেলা যায়। তাহলে প্রস্তুতি নেওয়ার খুব ভাল পরিমাণের সময় পাওয়া যাবে। শুধু ভাল ফল অর্জন করলেই চলবে না, বিদেশের পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতাটাও সাথে থাকার প্রয়োজন।

যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া প্রভৃতি দেশে প্রধান ভাষা ইংরেজি হওয়ায়, তাল মেলাতে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের বিশেষ কোনো অসুবিধা হয় না। কিন্তু চীন, জাপান, রাশিয়া, ফ্রান্স বা জার্মানীর মত দেশগুলোয় প্রধান ভাষা ইংরেজি নয়। তাদের রয়েছে নিজেদের মাতৃভাষা। অনেক ক্ষেত্রে এসব দেশে পড়তে যেতে হলে ঐ দেশের ভাষাটা শিখে নিলে সুবিধা হয়। কিন্তু এসব দেশেও ইংরেজীতে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। তবে রাস্তায় মানুষদের সাথে যোগাযোগ করার জন্য তাদের নিজস্ব ভাষাটা শিখে নেওয়াই শ্রেয়।

বিদেশে পড়তে চাইলে শুধু সামর্থ্য থাকলেই চলবে না, করতে হবে কিছু পড়াশুনা, দিতে হবে কয়েক রকমের পরীক্ষা। বিশ্বজুড়ে আপনার ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা কেমন, তা জানার জন্য আপনাকে সাধারণত দুইটি পরীক্ষায় বসতে হবে। একটি হলো আইইএলটিএস এবং অন্যটি হলো টোয়েফল। যুক্তরাজ্য এবং অস্ট্রেলিয়ার মতন কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে পড়তে যেতে চাইলে ইংরেজিতে নিজের দক্ষতার প্রমাণ হিসেবে আইইএলটিএস (IELTS) স্কোরের তথ্য দিতে হয় আর যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা প্রভৃতি দেশে টোয়েফল(TOEFL) স্কোর প্রয়োজন হয়। কোন কোন দেশে দুটি পদ্ধতিই গ্রহণযোগ্য। আর এসব স্কোর দুবছর পর্যন্ত কার্যকর থাকে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আবেদন করার আগেই পরীক্ষা দিতে বসা উচিত। এছাড়াও উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য স্যাট (SAT), জিআরই (GRE), জিম্যাট (GMAT) পরীক্ষাগুলোতেও অংশ নেওয়া লাগতে পারে।
(IELTS এর প্রস্তুতি নিয়ে আলাদা পোস্ট দিব)

Harvard University

সঠিক কোর্স নির্ধারণ
পেশাগত উন্নতি লক্ষে পৌছানোর জন্য কোন ধরনের পেশা আপনার জন্য উপযুক্ত তা খুঁজে বের করা মন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি পেশাগত সফলতা বা আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়নে সেই পেশার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোর্সে উচ্চশিক্ষা গ্রহনো কম তাৎপর্যপূর্ন নয়। তাই বর্তমান গ্লোবালাইজেশনের যুগে উচ্চশিক্ষার অনেক কোর্সের মধ্যে আপনাকে এমন একটি কোর্স বেছে নিতে হবে যা আপনার ভবিষ্যৎ পেশাগত দক্ষতার পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে গণ্য হবে।



তাছাড়া বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আপনি একেবারে একটি নতুন বিষয়ও বেছে নিতে পারেন। আমাদের দেশে প্রচলিত নয় কিন্তু বিশ্ব প্রেক্ষাপটে গুরত্বপূর্ন এবং চাহিদা সম্পন্ন এরকম কোন বিষয়কেও আপনি পছন্দ করতে পারেন। তবে সাধারন বিদেশের পাশাপাশি আমাদের দেশও যথেষ্ট চাহিদা আছে এরকম কোন কোর্সকে উচ্চশিক্ষার নির্বাচন করাই শ্রেয়। উপযুতক কোর্স নির্বাচনে যে বিষয় গুলো লক্ষ রাখা উচিত-
  • আপনি পেশাগত জীবনে কোন পেশায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান এবং সে অনুযায়ী আপনার বর্তমান যোগ্যতা সাপেক্ষে কোন কোর্সটি সবচেয়ে উপযোগী বলে মনে হয়?
  • উক্ত কোর্সের কোন বিকল্প কোর্স আছে কি না?
  • আপনি যে দেশে পড়তে যেতে আগ্রহী সে দেশে উক্ত কোর্সে উচ্চশিক্ষার মান বা পদ্ধতি বিশ্বে গ্রহন যোগ্য বা কতটুকু সমইয়োপযোগী।
  • কাঙ্ক্ষিত কোর্সটিতে পড়াশোনা শেষে কোথায় কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলবেন এবং সেখানে এর সুবিধা বা সম্ভাবনা অসুবিধা বা প্রতিবন্ধকতার মাত্রা কতটুকু?
  • আপনি যে দেশে পড়তে যাচ্ছেন সেখানে উক্ত কোর্সটি কত বছর মেয়াদি এবং টিউশন ফি অন্যান্য খরচ আপনার সামর্থের মধ্যে কিনা?
  • উক্ত কোর্সে পড়াশোনাকালীন সময়ে কোন আর্থিক সহায়তা বা বৃত্তির ব্যবস্থা রয়েছে কিনা, যদি তবে কি ধরনের যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্ধারন করা হবে এবং আপনি কতটুকু পূরন করতে সক্ষম হবেন?


উল্লেক্ষিত প্রশ্নগুলোর সঠিক গ্রহনযোগ্য ব্যাখ্যা পাওয়ার জন্য আপনি উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য পরামর্শ কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা নিতে পারেন। এছাড়া উক্তকোর্সে পড়াশোনা করেছেন বা করছেন এরকম কোন বিদেশী বা দেশি শিক্ষার্থীর সাথে আলাপ করে নিতে পারেন।


দেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচন
বিদেশে পড়াশোনার জন্য দেশ নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই গভীরভাবে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারন প্রতিটি দেশে পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা এক রকম নয়। যেমন- কোন দেশে টিউশন ফি বেশি, কোন দেশে কম, আবার টিউশন ফি আদৌ লাগেনা আবার কোন দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই মানের কোর্সের মেয়াদ কম, কোন দেশে আবার বেশি। কোথাও পার্ট টাইম জব করা যায়, কোথও পার্ট টাইম জব হয়তো পাওয়া যায় না, আবার কোথাও কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ। কোন দেশে সহজেই স্কলারশিপ পাওয়া যায়, আবার কোন কোন দেশে স্কলারশিপ পাওয়া বেশ কঠিন। কোন দেশের আবহাওয়া খুবই বিরূপ, আবার কোন দেশের আবহাওয়া নান্দনিক স্বাস্থকর। আবার এমনও দেশ আছে যেখানে পড়াশোনাকালীন সময়েই নাগরিকত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা থকে। সুতরাং সবকছু সুক্ষ্মাতিসুক্ষ বিশ্লেষন করে, সময় নিয়ে ভেবে চিন্তে তবেই দেশ নির্বাচন করুন। এক্ষেত্রে সাইটে প্রদত্ত দেশগুলো সম্পর্কে সর্বোচ্চ সংখ্যক তথ্য দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। তারপরও আত্মীয়স্বজন বা পরিচিত কেঊ যারা দেশে থাকেন বা দেশে সম্পর্কে ভাল জানেন, আপনার উচিত তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করা। বর্তমানে প্রায় প্রত্যেকটি দেশেরই বিভিন্ন বিভাগের নিজস্ব সরকারি ওয়েব সাইট আছে। যদি আপনার জানা না থাকে তবে Google বা Yahoo- রকম সার্চ ইঞ্জিন এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইটগূলো খুঁজে নিয়ে ভিজিট করুন এবং সেখানকার শিক্ষা ব্যাবস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, খরচ, স্কলারশিপ তথ্য, আবাসন ব্যাবস্থা, জীবনধারা, আবহাওয়া, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত জানার পর উপযুক্ত দেশ নির্বাচন করুন। এক্ষত্রে দু-তিনটি দেশ নির্বাচন করা ভাল। কারন একটি মাত্র দেশ পছন্দ করলে সেখানকার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পরও ভিসা পেতে ব্যর্থ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে আপনার বিদেশে যাত্রা অন্তত এক শিক্ষাবর্ষের জন্য পিছিয়ে যাবে।



দেশ নির্বাচনের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্বাচনের ক্ষেত্রেও বেশ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে প্রাথমিক ভাবে নির্বাচন করুন। কারন আর কিছুই না, অধিক পরিমান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শর্ত গুলো জেনে নিয়ে আপনার জন্য উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করতে সহজ হবে। আর / টি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করলে হয়তো দেখা যাবে তাদের শর্তগুলো পালন করে সেখানে ভর্তি হওয়া বা পড়াশোনা করা আপনার জন্য অপেক্ষাকৃত কঠিন অথবা অনেক ক্ষেত্রে অসম্ভবও হতে পারে। তাই কমপক্ষে /১০ টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাথমিকভাবে যোগাযোগ করে তাদের বিভিন্ন তথ্য জানার চেষ্টা করুন এবং এক্ষেত্রে যে সব বিষয়কে গুরত্ব দিতে হবে সেগুলো হলো-
  • আপনার পছন্দকৃত বিষয় আছে কি না।
  • পড়াশোনার মান কেমন।
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন।
  • শিক্ষা প্রুতিষ্ঠানের অবস্থান কোথায়।
  • লেখাপড়ার অন্যান্য খরচ কত এবং পরিশোধের পদ্ধতি কেমন।
  • স্কলারশিপ সুবিধা বা আর্থিক সহায়তার সম্ভাবনা আছে কি না।
  • আবাসন ব্যবস্থা।
  • ভর্তি যোগ্যতা ইত্যাদি।


দিন শেষে সিদ্ধান্তটা আমাদের নিজেদের। সুতরাং যতটা পারা যায় রিসার্চ করে পদক্ষেপ নিতে হবে।

সূত্র -

লেখক - 
রিদওয়ান অনিন্দ্য 
২য় ব্যাচ, আইন ও ভূমি প্রশাসন বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 


Comments